‘ক্যান্সার, দেয়ার ইজ ম্যানি অ্যান্সার’
রেডিও তেহরানের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিষয়ক সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান ‘স্বাস্থ্য কথার’ আসরে বিগত নভেম্বর/২০২১-এ ডাঃ মোঃ কামরুল হাসানের সাক্ষাৎকার প্রচারিত হয়। সাক্ষাতকারটি গ্রহণ করেন রেডিও তেহরান বাঙলা বিভাগের সিনিয়র সাংবাদিক জনাব গাজী আবদুর রশীদ। পাঠকদের সুবিধার্থে তা এখানে প্রকাশ করা হলো।
শ্রোতা/পাঠকবন্ধুরা! রেডিও তেহরানের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিষয়ক সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান ‘স্বাস্থ্য কথার’ আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন।
ক্যান্সার যাকে বাংলায় কর্কটরোগ বলা হয়। এ রোগটি বর্তমান বিশ্বে একটি ভয়াবহ এবং রাজকীয় রোগ। রাজকীয় এইজন্য বলছি- এ রোগের চিকিৎসা খরচ অনেক বেশি। প্রায় ২০০ শ’রও বেশি প্রকার ক্যান্সার রয়েছে। এ রোগে মৃত্যু হারও অনেক বেশি। প্রত্যেক ক্যান্সারই আলাদা আলাদা এবং চিকিৎসা পদ্ধতিও আলাদা।
ক্যান্সার নিয়ে ধারাবাহিকভাবে কয়েক পর্বে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সাক্ষাৎকার প্রচার করব। এ বিষয়ে আলোচনার জন্য আমাদের সাথে অতিথি হিসেবে আছেন ক্লিনিকাল হেমাটোলজি বিশেষজ্ঞ ডা. মো. কামরুল হাসান। তিনি মানিকগঞ্জ সরকারি কর্ণেল মালেক মেডিকেল কলেজে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন।
জনাব, ডা. মো. কামরুল হাসান, রেডিও তেহরানে আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছি।
রেডিও তেহরান: ডা.কামরুল হাসান। ক্যান্সার বা কর্কট রোগ (Cancer ) নিয়ে আলোচনার শুরুতেই জানতে চাইব- এই রোগটি আসলে কী?
ডা. মো. কামরুল হাসান: মানুষের শরীরে প্রায় ৭৫ ট্রিলিয়ন কোষ থাকে। একহাজার বিলিয়নে হয় এক ট্রিলিয়ন তাহলে ৭৫ লাখ কোটি কোষ থাকে মানুষের শরীরে। আর প্রতিটি কোষের স্বাভাবিক কার্যাক্রম খোদা প্রদত্ত কিছু বিধান যেটা ডিএনএ’র মধ্যে থাকে। আর এর দ্বারা কোষগুলো নিয়ন্ত্রিত হয়। এই কোষগুলোর কোনো একটি কোষে যদি অসঙ্গতি দেখা দেয় অর্থাৎ কোষের স্বাভাবিক যে আয়ু সেটি নষ্ট হয়ে যায় এবং কোষটি অনিয়ন্ত্রিতভাবে বেড়ে যায়। আর সেই বেড়ে যাওয়াটা এরকম- একটা থেকে দুইটা, দুইটা থেকে চারটা, চারটা থেকে আটটা….। স্বাভাবিক সময়ে যেকোষগুলোর মৃত্যু হওয়ার কথা এবং নতুন কোষের জন্ম নেযার কথা। সেটি না হয়ে অর্থাৎ কোষের মৃত্যু না হয়ে অস্বাভাবিক কিছু বৃদ্ধি হয় শরীরের বিভিন্ন টিস্যুতে। আর এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধিজনিত যে রোগ সেটাকেই বলা হয় ক্যান্সার। এককথায় যদি বলা হয়- ক্যান্সার বা কর্কটরোগ হচ্ছে অনিয়ন্ত্রিত কোষ বিভাজন সংক্রান্ত রোগসমূহের সমষ্টি।
রেডিও তেহরান: ডা. কামরুল হাসান-ক্যান্সার এর বাংলা যে কর্কট রোগ এই শব্দটি কি সাধারণ মানুষ জানে?
ডা. মো. কামরুল হাসান: দেখুন, যদিও ক্যান্সারের বাংলায় যে বলা হয় ‘কর্কট’ শব্দটি তার চেয়ে আমাদের রোগীরা ক্যান্সার শব্দটির সাথে বেশি পরিচিত।
রেডিও তেহরান: ক্যান্সার রোগটি কি ভয়াবহ কিংবা দূরারোগ্য ? একসময় বলা হতো-ক্যান্সার হলে সে মারা যাবে-অর্থাৎ কোনো চিকিৎসা নেই.. তো বাংলাদেশ ও ভারতের প্রেক্ষাপটে এই রোগের পরিস্থিতি সম্পর্কে যদি প্রাথমিক একটা ধারণা যদি দিতেন?
ডা. মো. কামরুল হাসান: ক্যান্সার শুধু বাংলাদেশ কিংবা ভারত নয় গোটা বিশ্বের জন্য একটি ভয়াবহ রোগ হিসেবে চিহ্নিত। আমাদের দেশে ক্যান্সার বিষয়ে যে সচেতনতা এবং ক্যান্সারের চিকিৎসাটা এদেশের মানুষের কাছে হয়তো নতুন মনে হতে পারে। কারণ হলো উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমাদের এখানে একসময় সংক্রামক ব্যাধির পরিমাণ খুব বেশি ছিল। আর এ সংক্রামক ব্যাধি নিরাময় বা নির্মূলের প্রোগ্রামগুলোর ওপর সরকার অনেক বেশি জোর দিয়েছিল। আর সুখের বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশে সংক্রামক ব্যাধিগুলো নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে। তো সংক্রামক ব্যাধিগুলো নিয়ন্ত্রণের আসার পর অসংক্রামক ব্যাধির ব্যাপারে দৃষ্টিগোচর করা হয়েছে। যারা আমাদের দেশে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাদের কাছে অসংক্রামক ব্যাধিগুলো এখন বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে।
সংক্রামক ব্যাধি নিয়ন্ত্রণে আসার পর মানুষের কোয়ালিটি অব লাইফ এবং গড় আয়ু বেড়ে গেছে। এরফলে অসংক্রামক ব্যাধির ওপর গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। আর এই অসংক্রামক ব্যাধির মধ্যে একটি হচ্ছে ‘ক্যান্সার’। এখনও ক্যান্সার দূরারোগ্য ব্যাধি হিসেবে চিহ্নিত। একটা সময় বলা হতো ক্যান্সার মানে নো অ্যানসার। ক্যান্সার যার হবে সে মারা যাবে। একথাটাই প্রচলিত ছিল বিশ্বে। কিন্তু এখন আর কথাটা ঐভাবে বলা হয় না। কিছুদিন আগেও বলা হতো যে, ক্যান্সার – দেয়ার ইজ সাম অ্যানসার। বর্তমানে আরো একটু এগিয়ে বলা হয় ক্যান্সার যদি আগে আগে ধরা পড়ে সেক্ষেত্রে দেয়ার ইজ মেনি অ্যানসার। এখন ক্যান্সার নিয়ে আমার নিজস্ব বিষয় যে বিষয়ে আমি কাজ করি হেমাটোলজিকাল ক্যান্সার, রক্ত ক্যান্সার, লিউকেমিয়া (Leukemia, অস্থিমজ্জার ক্যান্সার) এর বিষয়ে বলা হয়, There is many answer. এখন আমাদের অনেক রোগী ব্লাড ক্যান্সার ( Blood Cancer), হেমাটোলজিক্যাল ক্যান্সারগুলো থেকে সুচিকিৎসা পাচ্ছে খুব ভালোভাবে। ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীরা সুচিকিৎসার মাধ্যমে ভালোভাবে বেঁচে আছেন এবং সুন্দরভাবে জীবনযাপন করছেন।
রেডিও তেহরান: ডা.কামরুল হাসান- আপনি খুব সুন্দর করে ক্যান্সার রোগটি কি,এ রোগের ভয়াবহতা কতটা এখন এ রোগের বাস্তবতা সম্পর্কে আলোচনা করলেন। আপনি কোষের অস্বাভাবিক কিংবা অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধির কথা বলছিলেন। এই অস্বাভাবিক বৃদ্ধি হলে কি হয় সে কথাটি কি একটু বুঝিয়ে দেবেন?
ডা. মো. কামরুল হাসান: জ্বি, অস্বাভাবিক বৃদ্ধি হলে কি হয়? যে কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি হচ্ছে সেগুলো স্বাভাবিক কোষ নয়। তাদের স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা থাকে না। আর যদি কোষের স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা না থাকে তাহলে সেটি শুধু বোঝা হয়ে থাকে। শুধু বোঝাই না শরীরের অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গের কার্যক্রমে ব্যঘাত ঘটায়। এসময় শরীরে নানারকম লক্ষণ দেখা দেয়। এ অবস্থাকে আমরা ক্যান্সার রোগাক্রান্ত বলে থাকি।
রেডিও তেহরান: জ্বি। ডা. কামরুল হাসান, ক্যান্সার কত ধরণের হতে পারে-সে বিষয়টি কি বলবেন?
ডা.কামরুল হাসান: আপনি একটি চমৎকার প্রশ্ন করেছেন। কত ধরনের ক্যান্সার হতে পারে? শুরুতে যে বলেছিলাম আমাদের শরীরে যে ৭৫ ট্রিলিয়ন কোষ আছে। এটা বিভিন্ন অঙ্গ, যেমন- হাত, পা, নাক, কান, জিহবা, চামড়া, পাকস্থলি, অগ্নাশয়, লিভার থাকে এসবের যেকোনো অঙ্গে যদি ক্যান্সারের প্রলিফিরেশন হয় তখন সেই অঙ্গের নাম অনুসারে ক্যান্সারের নামকরণ করা হয়। লিভারে যদি হয় তখন এটার নাম হয় হেপাটোমা বা লিভার ক্যান্সার। স্কিনে ক্যান্সার হলে তাকে স্কিন ক্যান্সার বলা হয়। টিস্যুর ক্যান্সারগুলোর মধ্যে একেকটার নাম একেকরকম হয়। এরমধ্যে দেখা যায় কোনো ক্যান্সার খুব ধীরে ধীরে এগোচ্ছে আবার কোনো কোনোটা খুব দ্রুত ছড়াচ্ছে। কোনোটাতে দেখা যায় যেখানে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়েছে সেখানেই মাসের মাস থেমে থাকছে। আবার কোনোটা ঠিক ভিন্নরকম। আক্রান্ত হওয়ার কয়েক সপ্তাহ কিংবা কয়েক মাসের মধ্যে শরীরের অন্যান্য অঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে। এইভাবে শরীরে যতরকমের টিস্যু আছে সবগুলোতে ক্যান্সার হতে পারে। ফলে যে টিস্যুতে ক্যান্সারটি তৈরি হবে সেই টিস্যুর নাম অনুযায়ী আমরা ক্যানসারের নামকরণ করে থাকি।
রেডিও তেহরান: জনাব, ডা. মো. কামরুল হাসান, ক্যান্সার নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার প্রথম পর্বের শেষ দিকে আপনি ক্যান্সারের প্রকার বা ধরন নিয়ে কথা বলছিলেন। আজ আর আমাদের হাতে সময় নেই, আগামী আসরে এ বিষয় দিয়ে শুরু করব। তো আমাদেরকে সময় দেয়ার জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
ডা.কামরুল হাসান: আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ। সেইসাথে রেডিও তেহরানের শ্রোতাদেরকেও আমার পক্ষ থেকে ধন্যবাদ এবং আন্তরিক শুভেচ্ছ।
আর শ্রোতা/পাঠকবন্ধুরা, আপনারা সবাই পুষ্টিকর খাবার খাবেন, বেশি বেশি করে বিশুদ্ধ পানি পান করবেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন এবং নিয়মিত ব্যয়াম করবেন। সবাই সু্স্থ ও নিরাপদ থাকুন।#
দ্বিতীয় পর্ব
শ্রোতা/পাঠকবন্ধুরা! রেডিও তেহরানের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিষয়ক সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান ‘স্বাস্থ্য কথার’ আসরে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা ভালো ও সুস্থ আছেন।
ক্যান্সার একটি ভয়াবহ ও দুরারোগ্য ব্যাধী। প্রথম পর্বের আলোচনার শেষ দিকে আমাদের অতিথি ক্লিনিকাল হেমাটোলজি বিশেষজ্ঞ ডা.মো. কামরুল হাসান ক্যান্সারের প্রকার নিয়ে আলোচনা করছিলেন। তিনি বলছিলেন, মানবদেহে যতধরনের টিস্যু আছে সবগুলোতে ক্যান্সার হতে পারে। যে টিস্যুতে ক্যান্সার তৈরি হয় সেই টিস্যুর নাম অনুযায়ী ক্যান্সারের নাম হয়ে থাকে। ধরুন লিভারে ক্যান্সার হয়েছে। সেটি হবে লিভার ক্যান্সার। এভাবে জানা যায় প্রায় ২০০ শ’রও বেশি প্রকার ক্যান্সার রয়েছে। আর এ রোগে মৃত্যু হারও অনেক বেশি।
তো ক্যান্সার নিয়ে আজ দ্বিতীয় পর্বে আমরা ক্যান্সারের প্রকার দিয়েই আলোচনা শুরু করব। কারণ প্রথম পর্বের আলোচনা অসমাপ্ত ছিল।
জনাব, ডা. মো. কামরুল হাসান, রেডিও তেহরানে আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছি।
ডা. কামরুল হাসান: আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
রেডিও তেহরান: ডা. মো. কামরুল হাসান, আপনি প্রথম পর্বের শেষে বলছিলেন, যত প্রকার টিস্যু আছে মানবদেহে ততরকম ক্যান্সার হতে পারে। এ বিষয়ে গতপর্বের আলোচনার সূত্র ধরেই যদি আপনি বিস্তারিত আলোচনা করেন?
ডা. কামরুল হাসান: দেখুন, আমাদের শরীরের রক্ত তৈরি হয় অস্থিমজ্জাতে। আর অস্থিমজ্জায় যে সেলগুলো আছে সেখানে যদি ক্যান্সার হয় সেটাকে আমরা ব্লাড ক্যান্সার বলি। আবার ধরুন আমাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় যেমন- গালে, মুখে, চোয়ালের নিচে, বগলের নিচে কিংবা কুচকিতে যদি ক্যান্সার হয় তাহলে একে আমরা বলি লিম্ফোমা (Lymphoma)।
লিম্ফোমা হল, শরীরের জীবাণু প্রতিরোধ নেটওয়ার্কের এক ধরনের ক্যান্সার যা লিম্ফ্যাটিক সিস্টেম নামে পরিচিত। এটি T cell এবং B cell (উভয়ই শ্বেত রক্তকণিকা) থেকে শুরু হয় যা ইমিউন সিস্টেমের কোষ। এই কোষগুলি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে মানুষকে রোগ থেকে রক্ষা করতে কাজ করে।
আরেক ধরনের ক্যান্সার আছে যা প্লাজমা সেল থেকে হয়।
রেডিও তেহরান: ডা. কামরুল হাসান আপনি প্লাজমা সেলের কথা বলছিলেন, এই প্লাজমা সেল কী?
ডা.কামরুল হাসান: শরীরের রোগ প্রতিরোধ কার্যক্রমের সাথে রক্তের অনেক ধরনের সেল বা কোষ জড়িত থাকে তারমধ্যে একটি হচ্ছে প্লাজমা সেল ( Plasma Cell)। প্লাজমা সেল শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি করে। আর অ্যান্টিবডি রোগ জীবণু প্রতিরোধ করে। জীবাণুকে ধ্বংস করে দেয়। অ্যান্টিবডি যে সেলটি তৈরি করে সেটাকে বলে প্লাজমা সেল। আর এই প্লাজমা সেলে যদি ক্যান্সার হয় সেটাকে আমরা বলি মাল্টিপল মায়লোমা Multiple Myeloma।
রেডিও তেহরান: প্লাজমা সেলের ক্যান্সারকে মাল্টিপোল মায়ালামা বলে সেকথা আমরা জানলাম। আচ্ছা এর বাইরে রক্তের আরও কি কি ক্যান্সার হতে পারে ডা. কামরুল হাসান?
ডা.কামরুল হাসান: রক্তের কয়েকটি উপাদান আছে। যেমন লোহিত কোণিকা, শ্বেত কণিকা, অনুচক্রিকা। এখন যদি লোহিত কণিকাতে যদি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি হয় তখন তাকে আমরা একটি নাম দেই পলিসাইথেমিয়া। আবার যদি শ্বেত কণিকাতে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটে তখন তাকে লিউকেমিয়া বলি। এভাবে অনুচক্রিার হলে তার আরেকটি নাম আছে- এসেন্সিয়াল থ্রোম্বোসাইথেমিয়া। একিউট লিউকেমিয়াতে (acute leukemia) কোষগুল দ্রুত বর্ধনশীল ও খুবই অপরিপক্ক এবং রোগীর অবস্থা দ্রুত অবনতি হতে থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এর প্রধান লক্ষণ রক্তশূন্যতা, ইনফেকশন ও রক্তক্ষরণের সাথে জড়িত।
তো ব্লাড ক্যান্সারের মধ্যে এভাবে নানা নাম আছে। এর বাইরের যেসব ক্যান্সার সেগুলো টিস্যু অনুযায়ী নামকরণ করা হয়ে থাকে। আর ক্রণিক লিউকিমিয়া যেটা সেটা শরীরের ভেতর দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকে। রোগীর ব্লাড ক্যান্সার আছে সেটি নিজে বুঝতেও পারছে না।
রেডিও তেহরান: ডা. কামরুল হাসান আপনি বিভিন্ন রকমের ব্লাড ক্যান্সারের কথা বললেন। তো প্রায়ই আমরা শুনতে পাই মানুষের ব্লাড ক্যান্সার হয়েছে। তো এই ব্লাড ক্যান্সার বা রক্ত ক্যান্সারটা কেন হয়?
ডা.কামরুল হাসান: একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন করেছেন যা রোগীরাও প্রায়ই করে থাকে। দূর্ভাগ্যজনক হলেও এই প্রশ্নের সুনির্দ্দিষ্ট কোন উত্তর নেই। ব্লাড ক্যান্সার কেন হয় এর সঠিক কোনো উত্তর আসলে নেই। অন্যান্য ক্যান্সারের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা।
রেডিও তেহরান: রক্ত ক্যান্সার কেন হয় তার সঠিক বা সুনির্দিষ্ট কারণ এখনও বলা যায় না-সেক্ষেত্রে ডা. কামরুল হাসান-রক্ত ক্যান্সার যে হয়েছে সেটি কিভাবে বোঝা যাবে। অর্থাৎ এর লক্ষণগুলো কি?
ডা.কামরুল হাসান: ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণগুলো থেকে বোঝা যায় যে ব্লাডে কোন ধরণের ক্যান্সার হয়েছে। আমি অ্যাকিউট লিউকিমিয়া এবং ক্রণিক লিউকিমিয়ার কথা বলেছি। মাইলয়েড লিউকেমিয়ার কথাও বলেছি। ক্রণিক মাইলয়েড লিউকেমিয়ার ক্ষেত্রেও রোগী বুঝতে পারে না। অন্য যেকোনো রোগ নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেছেন। তখন ডা. পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে দিয়েছে। সে সময় হয়তো ধরা পড়লো তার ব্লাড ক্যান্সার আছে। অনেক সময় রোগীরা বলে থাকেন-আমার ওজন কমে যাচ্ছে। শরীর দূর্বল ও অবসাদ লাগে। কোনো কাজে শক্তি পাই না। আবার অনেকে বলেন যে আমার পেটের ভেতর একটা চাকার মতো মনে হয়। তখন আমরা বুঝতে পারি যে তার ব্লাড ক্যান্সার হয়েছে এবং তখন পরীক্ষা নিরীক্ষা করাই। অনেক সময় দেখা যায় শরীরের বিভিন্ন অংশে-গলায়, বগলে ফুলে আছে। রোগীরা এসে বলে থাকেন-অনেকদিন ধরে আমি খেয়াল করছি এই এই জায়গাগুলো ফুলে আছে, টিউমারের মতো হয়েছে। এগুলো দেখতে গুটি গুটি।
ডা.কামরুল হাসান ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করছিলেন-কিন্তু আজ আর আমাদের হাতে সময় না থাকায় আগামী সপ্তার আলোচনা এখান থেকেই আমরা শুরু করব। রেডিও তেহরানকে সময় দেয়ার জন্য আপনাকে আবারও অনেক ধন্যবাদ।
আর শ্রোতা/পাঠকবন্ধুরা, আগামী সপ্তায় ক্যান্সার নিয়ে আলোচনার তৃতীয় পর্বেও আমাদের সাথে থাকার আগাম আমন্ত্রণ জানিয়ে রাখছি। রক্ত ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. কামরুল হাসানের-ক্যান্সার বিষয়ক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় নিশ্চয়ই আপনারা উপকৃত হবেন।
তো আপনারা সবাই সু্স্থ ও নিরাপদ থাকুন এই প্রত্যাশায় গুটিয়ে নিচ্ছি স্বাস্থ্যকথার আজকের আসর।#
তৃতীয় পর্ব
রক্তের ক্যান্সার লিম্ফোমা কি? আসুন জেনে নেই। শ্রোতা/পাঠকবন্ধুরা! রেডিও তেহরানের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা বিষয়ক সাপ্তাহিক অনুষ্ঠান ‘স্বাস্থ্য কথার’ আসরে স্বাগত জানাচ্ছি আমি গাজী আবদুর রশীদ। আশা করছি আপনারা সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন।
ক্যান্সার বর্তমান বিশ্বে একটি ভয়াবহ রোগ। বহু রকমের ক্যান্সার রয়েছে। প্রত্যেক ক্যান্সারই আলাদা আলাদা এবং চিকিৎসা পদ্ধতিও আলাদা। এ রোগে মৃত্যু হারও অনেক বেশি।
ক্যান্সার নিয়ে ধারাবাহিকভাবে কয়েক পর্বের আলোচনার তৃতীয় পর্বে আজও আমাদের সঙ্গে অতিথি হিসেবে আছেন রক্ত ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডা. মো. কামরুল হাসান। তিনি মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন।
জনাব, ডা. মো. কামরুল হাসান, রেডিও তেহরানে আপনাকে স্বাগত জানাচ্ছি।
ডা.কামরুল হাসান: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
রেডিও তেহরান: ডা.কামরুল হাসান, দ্বিতীয় পর্বের আলোচনার শেষ দিকে আপনি ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণ নিয়ে কথা বলছিলেন। তো আর কি কি লক্ষণ দেখা যায়?
ডা.কামরুল হাসান: ব্লাড ক্যান্সারের অনেক লক্ষণের কথা গতপর্বে আলোচনা করেছি। আজ শুরুতে রক্তের ক্যান্সার লিম্ফোমা নিয়ে কথা বলব। লিম্ফোমায় আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে যে লক্ষণগুলো দেখা দেয় তা হচ্ছে, শরীরের বিভিন্ন স্থানে গোল গোল ছোট টিউমারের মতো দেখা যায়। চামড়ার নিচে হাত দিয়ে বোঝা যায় এটি। ঘাড়, কুচকি বা বগলের লসিকা গ্রন্থি ফুলে যাওয়া। অতিরিক্ত ক্লান্তি। অনিয়মিত ও বারবার জ্বর হওয়া। রাতে ঘাম হওয়া।
শ্রোতা/পাঠকবন্ধুরা! বিশেষজ্ঞ এই চিকিৎসক গতপর্বে লিম্ফোমা কি তা আলোচনা করেছিলেন। আপনাদের বোঝার সুবিদার জন্য এখানে তা তুলে ধরছি।
লিম্ফোমা হলো রক্তের বিশেষ এক প্রকারের ক্যান্সার যা মূলত লিম্ফনোড বা লসিকা গ্রন্থিগুলোকে আক্রান্ত করে। রক্তের প্রধান উপাদান দুটি। রক্তরস ও রক্তকোষ। রক্তের বিভিন্ন কোষীয় উপাদানের একটি হলো লিম্ফোসাইট, যা মূলত এক প্রকার শ্বেতরক্তকণিকা।
এর প্রধান কাজ হচ্ছে রোগ প্রতিরোধ করা। বিভিন্ন কারণে এই লিম্ফোসাইটের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি হলে দেখা দেয় লিম্ফোমা নামক ক্যান্সার। লিম্ফোসাইট যেসব অঙ্গে তৈরি ও বৃদ্ধি হয় এসব অঙ্গের মধ্যে রয়েছে লিম্ফনোড, স্প্লিন (প্লিহা), টনসিল ইত্যাদি। লিম্ফনোড শরীরের বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে। সুস্থ অবস্থায় এদের তেমন বোঝা যায় না। কিন্তু কোনো কারণে আকার বড় হলে তা বোঝা যায়। শরীরের বিভিন্ন অংশে লিম্ফনোডগুলো ছড়িয়ে আছে। তবে গলার দুই দিকে, ফুসফুসের দুই পাশে ও পেটের অভ্যন্তরে এর উপস্থিতি বেশি বোঝা যায়।
লক্ষণের যে কথা বলছিলেন তা হলো, শরীরের কোনো এলাকায় লিম্ফনোড বা অন্য কোনো লিম্ফেটিক অঙ্গ অস্বাভাবিক বড় হতে থাকে। ফুলে যাওয়া লিম্ফনোডগুলো রাবারের মতো নরম ও ব্যথাহীন হয়। এর সঙ্গে দীর্ঘদিনের জ্বর, ওজন কমে যাওয়া ও রাতের বেলায় প্রচুর ঘাম হয়। লিম্ফোমার জ্বর হয় সাধারণত অনিয়মিত ধরনের। মানে আসে আবার চলে যায়। জ্বরের মাত্রা কখনো খুব বেশি হয়, কখনো সামান্য। এই লক্ষণগুলোর অধিকাংশই যক্ষ্মার সঙ্গে মিলে যায় যা বিশেষ পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হতে হয়।
প্রকার : মূলত দুই প্রকার। হজকিনস লিম্ফোমা ও নন হজকিনস লিম্ফোমা। এর মধ্যেও অনেক সুক্ষ্ম রকমফের আছে। এদের চিকিৎসাও পার্থক্য আছ। আর অন্যান্য ক্যান্সারের মতো লিম্ফোমার কারণও নানাবিধ। অনেকটাই অজ্ঞাত। তবে কিছু কিছু কারণ জানা যায়।
আর আগেও বলেছিলাম দ্রুত বর্ধনশীল বা দ্রুত অবনতিশীল লিউকোমিয়ার কথা যদি বলা হয় হয়, তাহলে দেখা যায় একেবারে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আক্রান্ত রোগীর শারিরীক অবস্থার অবনতি হয়। দেখা গেল দুসপ্তাহ আগে ভালো ছিল। হঠাৎ করে দুর্বল হয়ে গেছেন, তার শরীরে জ্বর আসছে। তো এই যে দুর্বল হয়ে যাচ্ছে রোগী এরমানে হলো শরীরে রক্তশূন্যতা। আরো সিমটম হিসেবে দেখা যায় কোনো কোনো রোগীর দাঁতের গোড়া দিয়ে রক্ত আসছে। কারও কারও পায়খানার সাথে বা মলদ্বারের সাথে রক্ত পড়ে। তো আসলে রক্তশূন্যতার কারণে ঐসব লক্ষণগুলো দেখা দেয়। জ্বর, রক্তক্ষরণ, দুর্বলতা এবং চামড়ায় ছোট ছোট মশার কামড়ের মতো দাগ দেখা যেতে পারে।
আমি আগেও বলেছি শ্বেতকণিকার যে ক্যান্সার সেটি বেশ ভয়াবহ। ঐ রোগী তার স্বাভাবিক কাজ কর্ম করতে পারেন না। স্বাভাবিক শ্বেতকণিকার যে সংখ্যা তা কমে যায়, ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমতে থাকে। এরফলে রোগীর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ইনফেকশন হতে পারে। যেমন রোগীর ফুসফুসে জীবাণু আক্রমণ করতে পারে। তার কাশি হবে, শ্বাসকষ্ট হবে। আবার অনেকের দেখা যায় কিডনিতে সংক্রমণ হয়ে যায়। সবচেয়ে বেশি যে লক্ষণ থাকে সেটি হচ্ছে- জ্বর এবং রক্তে ইনফেকশন। আর এ অবস্থায় কোনো ওষুধে কাজ হয় না। এ অবস্থায় আমরা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বুঝতে পারি এই রোগীর ব্লাড ক্যান্সার হয়েছে।
রেডিও তেহরান: ডা.কামরুল হাসান আপনার আলোচনা থেকে আমাদের শ্রোতা/পাঠকবন্ধুরা রক্ত বা ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণগুলো জানতে পারলেন। লক্ষণ জানা গেল এবার কিভাবে এবং কোথায় পরীক্ষা নিরীক্ষা করাবেন। রোগটা কিভাবে নির্ণয় হবে। কোন ডাক্তারের কাছে যাবেন। বিষয়টি যদি একটু বুঝিয়ে বলেন?
ডা.কামরুল হাসান: খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রশ্ন করেছেন আপনি। এই মুহূর্তে আমাদের দেশের জন্য এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা খুবই জরুরি। আমাদের দেশে বর্তমানে ব্লাড ক্যান্সারের রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। হেমাটোলজির রোগীগুলো কিভাবে তাদের রোগ নির্ণয় করবেন, কোথায় যাবেন?
দেখুন, হেমাটোলজির রোগ কিন্তু অনেক। আমরা শুধু ক্যান্সারের বিষয় নিয়ে কথা বলছি। এর আগে ক্যান্সারের যে লক্ষণগুলোর কথা বললাম, যেমন ধরুণ- শরীর দুর্বল, জ্বর, দাঁতের গোড়া দিয়ে রক্তক্ষরণ, মলদ্বার দিয়ে রক্তক্ষরণ- এগুলো কিন্তু শুধু ব্লাড ক্যান্সার না আরো অনেক রোগের পূর্ব লক্ষণ। তো এধরণের লক্ষণ দেখা দিলে রোগীরা- তার হাতের কাছে যে কোনো একজন চিকিৎসকের কাছে গিয়ে থাকেন। তখন সেখানে সেই চিকিৎসক রোগীর পরীক্ষা নিরীক্ষা করে থাকেন। তো ল্যাবরেটরি টেস্টের মধ্যে যেমন রোগীর রক্তের ‘সিবিসি পরীক্ষা করান। এটি একেবারে প্রাথমিক একটি পরীক্ষা। আর এই পরীক্ষাতে যদি ব্লাড ক্যান্সার হয়ে থাকে তাহলে অনেক অস্বাভাবিকতা চলে আসে। স্থানীয় ডাক্তাররা যদি একটু মনোযোগ সহকারে রোগী দেখেন এবং রিপোর্টগুলো দেখেন তাহলে তাদের কাছে একটি ধারণা বা একটা সন্দেহ হওয়া স্বাভাবিক যে রোগীর রোগটা হয়তো আরো অনেক গভীরে। যদি তাদের মধ্যে সন্দেহ হয় যে তার ব্লাড ক্যান্সার তখন চিকিৎসকদের উচিত হবে সরাসরি হেমাটোলজিস্টের কাছে রেফার করা।
একটা সময় ছিল বাংলাদেশে হেমাটোলজিস্টের সংখ্যা খুবই কম ছিল। কিন্তু সুখের বিষয় এখন অনেক হেমাটোলজিস্ট হয়েছে বাংলাদেশে। ফলে তাদের কাছে রোগী গেলে সুর্নিষ্টভাবে নির্ধারণ করতে পারবেন রোগীর আসেলে কি হয়েছে!
রেডিও তেহরান: ডা. কামরুল হাসান, আপনি রক্তের প্রাথমিক পরীক্ষা সিবিসি’র কথা বলছিলেন এরপর কী পরীক্ষা করাতে হবে?
ডা.কামরুল হাসান: জ্বি, সিবিসি পরীক্ষার পর রক্তের সিবিএস পরীক্ষা করাই। এই পরীক্ষা দিয়েই কিন্তু মোটামুটি নির্ধারণ হয়ে যায় রোগীর ব্লাড ক্যান্সার কি না ? অনেক সময় এই পরীক্ষায় যদি নির্ধারণ করা সম্ভব না হয় তখন ভিন্নরকমের পরীক্ষা করা হয়। আর যদি দেখা যায় ব্লাড ক্যান্সার নির্ধারণ হয়েছে তারপরও বোনম্যারো পরীক্ষা করানো হয়।
রেডিও তেহরান: আচ্ছা এই বোনম্যারো পরীক্ষাটা আসলে কী?
ডা.কামরুল হাসান: বোনম্যারো পরীক্ষাটা হচ্ছে, মানুষের যে রক্ত তৈরি হয় সেটি হাঁড়ের মধ্যে হয়। শরীরের যেসব জায়গায় নরম হাঁড় আছে সেখানে রক্তকোষগুলো তৈরি হয়ে থাকে। ঐ হাঁড়ের ভেতর থেকে রক্ত নিয়ে যে পরীক্ষা করা হয় সেটাকে বোনম্যারো পরীক্ষা বলা হয়। এই পরীক্ষার মাধ্যমে কোন ধরণের ব্লাড ক্যান্সার কিংবা আদৌ ব্লাড ক্যান্সার কি না নিশ্চিত হওয়া যায়।
আমরা ব্লাড ক্যান্সারের যে চিকিৎসা করি বা ব্লাড ক্যান্সার নির্ণয় করি তা সাধারণত ধাপে ধাপে করে থাকি। ধাপগুলো হচ্ছে- প্রথমে জানতে চেষ্টা করি ব্লাড ক্যান্সার কি না। দ্বিতীয় ধাপটি হচ্ছে কোন ধরণের ব্লাড ক্যান্সার। এটি মাইলয়েড না লিম্ফয়েড। নাকি এটি অ্যাকিউট না ক্রণিক। এরপর আরও সাবটাইটেল করা হয়। যেমন- লিম্ফয়েডের মধ্যে টি- সেল নাকি বি- সেল কিংবা মাইলয়েডের মধ্যে কোনটি। আর এগুলো নির্ধারণের জন্য পরবর্তী ধাপে আরেকটি যে পরীক্ষা করি তাকে বলে ‘ফ্লো সাইটোমেট্রি’। একসময় আমাদের দেশে ফ্লো সাইটোমেট্রি সহজসাধ্য ছিল না। এখন বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি সেন্টারে ফ্লো সাইটোমেট্রি পরীক্ষা করা হচ্ছে এবং ব্লাড ক্যান্সারের রূপ নির্ধারণ করা এখন সম্ভব হচ্ছে।
জনাব, ডা. মো. কামরুল হাসান, ব্লাড ক্যান্সার নির্ণয়ের বিষয়ে নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
ডা.মো.কামরুল হাসান: আপনাকেও ধন্যবাদ।
আর শ্রোতা/পাঠকবন্ধুরা, আগামী সপ্তায় ব্লাড ক্যান্সার নির্ণয়ের আরও কিছু পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হবে। সে আসরেও আমাদের সাথে থাকবেন বলে আশা করছি।
স্বাস্থ্যকথার আসর থেকে বিদায় নেয়ার আগে বলে রাখছি, আপনারা সবাই পুষ্টিকর খাবার খাবেন, বেশি বেশি বিশুদ্ধ পানি পান করবেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন এবং নিয়মিত ব্যয়াম করবেন। সবাই সু্স্থ ও নিরাপদ থাকুন।#
স্বাস্থ্যকথার আসরটি গ্রন্থণা, উপস্থাপনা ও প্রযোজনা করেছেন গাজী আবদুর রশীদ।
পার্সটুডে/গাজী আবদুর রশীদ/১৫
Comments
‘ক্যান্সার, দেয়ার ইজ ম্যানি অ্যান্সার’ — No Comments
HTML tags allowed in your comment: <a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>